ইমোফিলিয়া: খুব সহজে প্রেমে পড়ার মানসিক প্রবণতা

ইমোফিলিয়া: খুব সহজে প্রেমে পড়ার মানসিক প্রবণতা

আপনার মাঝে কী যখন তখন, খুব সহজে যে কারো প্রেমে পড়ার প্রবণতা রয়েছে? তাহলে আপনি “ইমোফিলিয়া” নামক মানসিক প্রবণতায় ভুগছেন, যাকে এক কথায় “ইমোশনাল প্রমিসকিউটি” বা বাছবিচারহীন আবেগ বলা যায়।

অনেকের মুখেই শোনা যায়, “আমি খুব সহজে প্রেমে পড়ি”, “আমি খুব সহজে আবেগপ্রবণ হয়ে যাই”, “আমি সহজে প্রেমে পড়াকে উপভোগ করি”, বা “আমি ভাল-মন্দ বিচার না করেই প্রেমে পড়ে যাই” ইত্যাদি। এসব কিছুই অনিয়ন্ত্রিত বা বাছবিচারহীন আবেগসম্পন্ন মানুষের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এই ধরনের মানসিকতাকে “ইমোফিলিয়া” বলছেন মনস্তত্ত্ববিদরা।

তাদের মতে, ইমোফিলিয়া অন্যান্য রোমান্টিক মানসিক অনুভূতি থেকে একটু ভিন্ন ধরনের।

ইমোফিলিয়ায় কারও প্রতি দুর্বল হওয়ার ক্ষেত্রে নেতবিাচক মানসিকতা না থাকলেও এভাবে বাছবিচার না করেই কারও প্রতি ঝুঁকে পড়ার কারণে তার কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। যা থেকে পরবর্তী সময়ে বিষণ্ণতা বা হতাশাও কাজ করে।

তবে সঙ্গীর দ্বারা প্রতারিত হয়ে বা অন্য যেকোনো কারণে একজনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর অন্য একজনের প্রতি দুর্বল হওয়াকে ইমোফিলিয়া বলা যাবেনা।

খুব দ্রুত প্রেমে পড়া বিষয়টি অনেকের কাছেই বেশ মজার এবং রোমান্টিক মনে হতে পারে। কিন্তু এর অতি নেতিবাচক দিকও রয়েছে। বিশেষত যখন কেউ এমনভাবে কারণে-অকারণে প্রেমে পড়ে, তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয়। তাছাড়া এ ধরনের ব্যক্তিদের মাঝে বিশেষ সম্পর্ক বা মানুষের প্রতি আবেগ-অনুভূতি খুব কম থাকে। তারা কাছের মানুষদের প্রতি যথোপযুক্ত মনোযোগ বা গুরুত্ব দিতে ব্যর্থ হয়। খুব সহজে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার মত মানসিক অবস্থা থাকলে যে কেউ খুব সহজে সেই ব্যক্তিকে নেতিবাচকভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ পায়।

বিভিন্ন গবেষণাতে দেখা গেছে, এই ধরনের মানসিকতা একজন মানুষের চরিত্রের ওপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সব কিছু মিলিয়ে বলা যায় এ ধরনের মানসিকতা নিজের, পরিবারের ও সমাজের জন্য অনেক সময় অসঙ্গতিপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে এটি নির্মম পরিণতি বয়ে নিয়ে আসতে পারে।

একজন ইমোফিলিয়ায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি খুব সহজে অন্যদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শুধু তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয় তা নয়, বরং তাদের পক্ষে বিচার বিবেচনা করার শক্তিও লোপ পায়। তাছাড়া তারা তাদের নিজেদের প্রতি অন্যদের অনুভূতিকেও যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারেনা। এতে সব দিক থেকে এক চরম মানসিক সংকট সৃষ্টি হয় এবং সম্পর্কের মাঝে প্রতিনিয়ত ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হতে থাকে।

তবে সবক্ষেত্রে ইমোফিলিয়াকে সম্পূর্ণরূপে নেতিবাচক বলাও ঠিক হবেনা। তবে এর সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার মাত্রাই বেশি। এ ধরনের মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের স্বাভাবিক জীবযাপন বা স্বাভাবিক সম্পর্কে আবদ্ধ থাকতে পরিবার ও বন্ধুদের এগিয়ে আসতে হবে।

Source

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *